১৫ বছর ধরে ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরাঞ্চলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল রয় চার্লস ওয়ালার (৬০)। তার অত্যাচারের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত সিরিয়াল ধর্ষণ। অপহরণ, ধর্ষণ, ওরাল যৌনক্রিয়া, বলাৎকার ও বিদেশে অনুপ্রবেশসহ বিভিন্ন অভিযোগে আদালত তাকে ৮৯৭ বছরের জেল দিয়েছে।
রয় চার্লস ওয়ালার তার অপরাধের কারণে পরিচিতি পেয়েছে ‘নরক্যাল রেপিস্ট’ বা নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার ধর্ষণকারী হিসেবে। শুক্রবার আদালত তার বিরুদ্ধে ওই রায় দিয়েছে। ফলে তাকে এখন বাকি জীবন রাজ্যের কারাগারে কাটাতে হবে।
এ কথা বলেছে স্যাক্রামেন্টে কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট এটর্নির অফিস। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ৯ জন নারীর ওপর ধারাবাহিক নির্যাতন করার কারণে ৪৬টি অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় নরক্যাল রেপিস্টকে।
ওই নারীরা আদালতে অত্যাচারিত হওয়ার সাক্ষ্য দিয়েছেন। বর্তমানে ৬০ বছর বয়সী ওয়ালার নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়া কাউন্টিতে নির্যাতন করেছে ৬ জন নারীকে। বেশির ভাগ সময়ে তাদের ঘরে জোর করে প্রবেশ করতো সে। ভিকটিমকে বেঁধে ফেলতো। বার বার তাদের ওপর যৌন নির্যাতন করতো। এমন তথ্য স্যাক্রামেন্টো পুলিশ ডিটেক্টিভ এভিস বেরির। তার মতে, সিরিয়াল ধর্ষণকারী ওয়ালার সাধারণত রাতের বেলা অপরাধে নামতো। কখনো কখনো নারীদের অপহরণ করতো। তাদেরকে নিয়ে যেতো বিভিন্ন এটিএমে। সেখানে তাদের ওপর যৌন নির্যাতন চালাতো সে।
এ ছাড়া সে ওইসব নারীর বাসা থেকে জিনিসপত্র চুরি করতো। ২০০৬ সাল থেকে পুলিশ এ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহে নামে। তাতে ৬টি ঘটনার সঙ্গে সন্দেহজনক একজনের ডিএনএ’র সম্পর্ক পাওয়া যায়। তবে এই সন্দেহজনক ব্যক্তি যে ওয়াকার এ বিষয়টি চিহ্নিত করতে পারছিলেন না তারা। কারণ, রাজ্যের অপরাধ বিভাগে ডিএনএ’র ডাটাবেজ ছিল না।
অবশেষে জট খোলে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে। তদন্তকারীরা ইনভেস্টিগেটিভ জেনেটিক জিনিয়ালোজি (আইজিজি) তদন্ত শুরু করেন। এর মাধ্যমে সন্দেহভাজন কিছু অপরাধীর আত্মীয়স্বজনকেও রাখা হয়। এ অনুসন্ধান ওয়ালারকে সনাক্ত করতে সহায়তা করে।
ডিস্ট্রিক্ট এটর্নির মতে, এসব ডিএনএ পরীক্ষার তথ্য শেয়ার করা হয় আইন প্রয়োগকারীদের সঙ্গে। ধারাবাহিকভাবে তদন্ত চলতে থাকে ফ্যামিলি ট্রি বা পারিবারিক সম্পর্কের বিষয়ে। এক পর্যায়ে ফোকাস পড়ে ওয়ালারের ওপর। একই ডিএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় ‘গোল্ডেন স্টেট কিলার’ শনাক্ত করতে। এর কয়েকদিনের মধ্যে বার্কলিতে কর্মস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ওয়ালারকে। সূত্র: সিএনএন
Leave a Reply